মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লক্ষী ভান্ডার, যুবশ্রী, রূপশ্রী, কন্যাশ্রী ইত্যাদি বহু প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গে চালু রয়েছে, যাতে করে সাধারণ মানুষরা উপকৃত হচ্ছেন। বর্তমানে লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পটি অত্যন্ত মাত্রায় জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ঠিক তেমনি আরো একটি প্রকল্প রয়েছে যার নাম শিক্ষাশ্রী প্রকল্প (Sikshashree Scheme)। এই শিক্ষাশ্রী প্রকল্পটি চালু হয় ২০১৪ সাল থেকে।
সিডুল কাস্ট (SC) ও সিডুল ট্রাইব(ST) ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করবার জন্যই মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রয়াস। শিক্ষাশ্রী প্রকল্পটি ওয়েস্ট বেঙ্গল শিক্ষাশ্রী স্কলারশিপ স্কিম বা পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষাশ্রী স্কিম অথবা ওয়েস্ট বেঙ্গল স্কলারশিপ স্কিম ফর এসসি এবং এসটি স্টুডেন্ট ইত্যাদি নামেও বেশ পরিচিত।
শিক্ষাশ্রী প্রকল্পের বিবরণ / Overview of Sikshashree Scheme
শিক্ষাশ্রী প্রকল্পের বিবরণ
প্রকল্পের নাম | শিক্ষাশ্রী |
কোন কোন রাজ্যে চালু হয়েছে | পশ্চিমবঙ্গ |
প্রকল্প শুরু করেছেন | মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় |
কোন বিভাগের অন্তর্গত | অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ ও আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তর |
প্রকল্প শুরুর তারিখ | ২০১৪-২০১৫ |
প্রকল্পের বর্তমান স্ট্যাটাস | ২০২৪ এ চালু আছে |
কারা আবেদন করতে পারবেন | SC/ST অন্তর্গত পঞ্চম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণীর পড়ুয়ারা |
আবেদনের বয়স সীমা | ১০ বছর থেকে ১৩ বছর |
কি কি সুবিধা পাবেন | বার্ষিক ৮০০ টাকা |
আবেদনপত্র | Click Here |
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট | Click Here |
শিক্ষাশ্রী প্রকল্প কী? What is Sikshashree Scheme ?
পশ্চিমবঙ্গের এই শিক্ষাশ্রী প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণী অর্থাৎ তপশিলি জাতি বা উপজাতিদের ছেলেমেয়েরা যাতে পড়াশোনা সুষ্ঠুভাবে করতে পারে, তার জন্য সরকার আর্থিকভাবে সহায়তা করবে তাদের। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণীর পড়ুয়াদের জন্য এই প্রকল্প মূলত চালু করা হয়েছে।
শিক্ষাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা / Benefits of Sikshashree Scheme
- শিক্ষাশ্রী প্রকল্পের স্কিমটি ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাক্ ম্যাট্রিক স্কলারশিপ হিসেবে পরিচিত অর্থাৎ পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণীতে পাঠ্যরত শিক্ষার্থীরাই এই বৃত্তি পাবে।
- সরাসরি নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা পাবেন ছাত্র-ছাত্রীরা। এটি একটি স্কিম যার ফলে শিক্ষার্থীরা নিজস্ব ব্যাংক একাউন্টে টাকা স্থানান্তরিত করা হবে।
শিক্ষাশ্রী প্রকল্পের উদ্দেশ্য / Objectives of Sikshashree Scheme
এই প্রকল্প মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে চালু করা হয়েছে। রাজ্যের স্কুলগুলিতে শিক্ষার প্রচার এবং স্কুলের ড্রপ আউট কমাতেই মূলত এই প্রকল্পের সূচনা।
শিক্ষাশ্রী প্রকল্পটিতে আবেদনের জন্য যোগ্যতা / Eligibility Criteria for Sikshashree Scheme
এই শিক্ষাশ্রী প্রকল্পে আবেদন করবার জন্য যে যে বিষয়গুলির ওপর নজর রাখতে হবে সেগুলি হল:
- ছাত্র-ছাত্রীদের তপশিলি জাতি হতে হবে।
- পশ্চিমবঙ্গের দিনে পন্ডিতরাই এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
- ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবারের বার্ষিক আয় আড়াই লাখ টাকার কম হতে হবে।
- পশ্চিমবঙ্গ স্বীকৃত সরকারি স্কুল কিংবা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল সরকার স্বীকৃত স্কুলগুলিতে নিয়মিত অর্থাৎ পুর্ণকালীন ছাত্র হতে হবে।
- একজন শিক্ষার্থী একের অধিক কোন বৃত্তি পাবে না। এই বিষয়টি যাচাই করে নেওয়া হবে, যদি অন্য কোন বৃত্তি পান শিক্ষার্থীরা সে ক্ষেত্রে ঐ বৃত্তির টাকা ফেরত দিতে হবে
- একজন ছাত্র যেকোনো ক্লাসে পড়ার জন্য বৃত্তি পাবেন তাও মাত্র এক বছরের জন্য কিন্তু যদি ওই শিক্ষার্থী একই ক্লাসে পুনরাবৃত্তি করতে থাকে তাহলে তাকে দ্বিতীয় বছরের জন্য কোন বৃত্তি দেওয়া হবে না। পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত হলে তবেই ওই ছাত্র আবার এই সুবিধা পাবে।
- শিক্ষার্থীদের স্কুলে ভালো আচরণ এবং বিদ্যালয়ের উপস্থিতির হার সঠিক থাকতে হবে।
শিক্ষাশ্রী প্রকল্পের জন্য কারা আবেদন করতে পারবেন(Who can apply for Shikshashree scheme) ?
শুধুমাত্র তপশিলি জাতি ও উপজাতি ছাত্রদেরই এই বৃত্তির ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। তবে অবশ্যই তার সাথে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
শিক্ষার্থী প্রকল্পের জন্য কারা আবেদন করতে পারবেন না(Who cannot apply for the Sikshashree Scheme) ?
- হোস্টেলে পাঠরত শিক্ষার্থীরা এই প্রকল্পের আওতার বাইরে।
- যে সমস্ত শিক্ষার্থীরা সরকারি অফিসে কর্মরত পরিবারের সন্তান তাঁরা এই প্রকল্পের আওতার বাইরে থাকবে।
শিক্ষার্থী প্রকল্পে আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস/ Documents required to apply for Sikshashree Scheme
- শিক্ষার্থীদের ব্যাংকের পাস বই থাকা বাঞ্ছনীয়।
- পাসপোর্ট মাপের ছাত্র-ছাত্রীদের ছবি
- পারিবারিক আয়ের প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে।
- জাতিগত শংসাপত্র জমা দিতে হবে।
- ঠিকানা প্রমাণ পত্র জমা দিতে হবে।
- শিক্ষাগত নথি জমা দিতে হবে।
- আধার কার্ডের প্রতিলিপি জমা দিতে হবে।
শিক্ষাশ্রী স্কিমের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট হল http://202.66.172.169/ এই ওয়েবসাইটে গিয়ে এই স্কিমের বিষয়ে সমস্ত কিছু বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা আছে প্রয়োজনে যে কেউ দেখে নিতে পারেন।
শিক্ষার্থী প্রকল্পটিতে আবেদন করার পদ্ধতি/ How to apply in Sikshashree Scheme
অফলাইন এবং অনলাইন দুই মাধ্যমেই রয়েছে আবেদন করবার সুবিধা যে সমস্ত শিক্ষার্থীরা অনলাইন আবেদন করবেন তাদের জন্য অনলাইনের ফর্মটি পূরণ করবার প্রতিটি ধাপ নিচে দেওয়া হল যাতে করে অনলাইনে আবেদন করতে গেলে কোনরকম কোন অসুবিধায় পড়তে না হয়।
অফলাইনে আবেদন পদ্ধতি
- ছাত্রছাত্রীরা নির্দিষ্ট ফর্মে নিজের স্কুলেও আবেদন করতে পারবে। আবেদন করার পর বিদ্যালয়ে এ বিষয়টিকে নিয়ে কাজ শুরু করে।
- শিক্ষার্থী প্রকল্পে কত টাকা স্কলারশিপ দেয়: ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস নির্বিশেষে স্কলারশিপ দেয়া হয় এটি বাৎসরিক ৮০০ টাকা করে দেওয়া হয়।
অনলাইনে আবেদন পদ্ধতি
শিক্ষাশ্রী প্রকল্পের ফর্ম রাজ্য সরকারের নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে এমনকি নেটেও ফর্ম ফিলাপ করা হয়।
- রেজিস্ট্রেশনের সময় কাস্ট সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক।
- অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষার সিস্টেমে নিবন্ধন ফরমটি পূরণ করতে গেলে প্রথমেই লগইন করতে হবে।
- লগইন করার জন্য আবেদনকারীর আইডি পাসওয়ার্ড OASIS পোর্টাল দ্বারা পাঠানো হবে।
- পোর্টালে পাওয়া আইডি পাসওয়ার্ডের দ্বারা লগইন করতে হবে আবেদনকারীকে। লগইন করার পর পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষাশ্রী স্কিমের অনলাইন আবেদন ফর্মটি পূরণ করতে হবে।
- ফর্মটি পূরণ করবার পর সমস্ত প্রয়োজনীয় নথিও আপলোড করতে হবে।
- এরপর সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে এবং ওই আবেদন পত্র ও স্বীকৃতি স্লিপের অনুলিপিটি অবশ্যই ডাউনলোড এবং প্রিন্ট আউট করতে হবে আবেদনকারীকে।
- অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করার পর আবেদন পত্রের যে প্রিন্ট আউটটি রয়েছে সেটি গ্রামীণ এলাকার ছাত্র-ছাত্রীরা ব্লগ উন্নয়ন অফিসে ও পৌর এলাকার ছাত্র-ছাত্রীরা সেটি জেলা কল্যাণ অফিসারের অফিসের জমা দিতে হবে।
- অফিসাররা আবেদন পত্র গুলি যাচাই করবেন। সার্টিফিকেট যোগ্যতা প্রবৃত্তির পরিমাণ সহ তাঁরাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
- যাচাই করনের পদ্ধতির মাধ্যমে যে সমস্ত শিক্ষার্থীরা সফল হবেন তাঁরা তাদের নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এই শিক্ষাশ্রী স্কিমের বৃত্তির টাকা পেতে শুরু করবেন।
পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষাশ্রী হেল্পলাইন নম্বর:- ০৮৪২০০২৩৩১১
উপরে দেওয়াই হেল্পলাইন নম্বর এর মাধ্যমে আরো বিশদে জানতে পারবেন এই স্কিমের বিষয়ে।
লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের আবেদনের স্ট্যাটাস চেক করার পদ্ধতি / Sikshashree Scheme Application Status Check
অনলাইনে আবেদনকারীর আইডি মাধ্যমে খুব সহজেই তা দেখে নেওয়া যেতে পারে সরকারের আর্থিক সহায়তায় তপশিলি আদিবাসী বাবা মায়েদের বর্তমানে খুশির জোয়ার কারণ তাদের ছেলে মেয়েরাও পড়াশোনা শিখে সমাজের মূল স্রোতে মিশবে এটাই তাদের কাছে অনেক বড় প্রাপ্তি দরিদ্র থেকে অতি দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকার শুধুমাত্র পড়াশোনার দিকে আর্থিক সহায়তা নয় তাদের খাদ্যের ব্যবস্থাও করেছেন সরকার।
এভাবে রাজ্যে প্রতিটি মানুষের কাছে প্রতিটি পরিস্থিতিতে পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আজি নিজের সন্তানের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে শিক্ষাশ্রী প্রকল্পের সুযোগকে কাজে লাগান এবং সত্তর দেওয়া ওয়েবসাইটে নিজের সন্তানের নাম নিবন্ধীকরণ করুন।
শিক্ষাশ্রী প্রকল্পের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক:
শিক্ষাশ্রী প্রকল্পের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট লিঙ্ক | Click Here |
শিক্ষাশ্রী প্রকল্পের আবেদনের বাংলা ফর্ম ডাউনলোড লিঙ্ক | Click Here |
শিক্ষাশ্রী প্রকল্পের আবেদনের ইংরেজি ফর্ম ডাউনলোড লিঙ্ক | Click Here |
শিক্ষাশ্রী প্রকল্পের আবেদনের জন্য সিডুল কাস্টদের জন্য নিয়ামাবলি | Click Here |
শিক্ষাশ্রী প্রকল্পের আবেদনের জন্য সিডুল ট্রাইবদের জন্য নিয়ামাবলি | Click Here |