নির্ভীক স্কিম: ভারতের ক্ষুদ্র এক্সপোর্টারদের জন্য সরকারের নতুন একটি প্রকল্প, জেনে নিন কি কি সুবিধা থাকছে এই প্রকল্পে

Aindrila Dhani
NIRVIK Scheme
WhatsApp Channel Follow Now

NIRVIK Scheme : সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে চলতি আর্থিক বছরের নতুন বাজেট। তবে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে একটি স্কিমের ব্যাপারে জানিয়েছিল কেন্দ্র সরকার। সেই স্কিম যে কতটা লাভদায়ক তা হয়তো অনেকেই জানেন না‌। আজ আমরা আপনাদের সেই স্কিমটির সম্পর্কেই বলবো। আমরা কথা বলব নির্ভীক স্কিম (NIRVIK Scheme)-এর সম্পর্কে।

২০১৯ সালে পঞ্চম বারের মতো ভারতের রপ্তানি ১.৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল। যে কারণে রপ্তানিকারকদের ঋণ নেওয়া ও তার শোধ করার ব্যাপারে বেশ ঝুঁকি পোহাতে হয়েছিল। আর তাদের এই চিন্তা নিছক কল্পনা ছিল না। সেই সময় ২০২০-২১ অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্ভীক স্কিম (NIRVIK Scheme) তথা নির্যাত ঋণ বিকাশ যোজনার উল্লেখ করেছিলেন।

ক্ষুদ্র স্কেল রপ্তানিকারকদের ঋণ পাওয়ার হার বৃদ্ধিতে এই যোজনা অনেকটা সাহায্য করতে সক্ষম। পাশাপাশি ঋণ প্রদানও অনেকটা সহজ এই স্কিমের মাধ্যমে। ভারতের ঋণ রপ্তানি কর্পোরেশনের অধীনে নির্ভীক স্কিম বাস্তবায়ন করা হয়েছিল।

এই স্কিমের সাহায্যে ক্ষুদ্র রপ্তানিকারকরা উচ্চ বীমা কভারেজের সুবিধা নিতে পারবেন। এর পাশাপাশি তাদের বীমা প্রিমিয়াম হ্রাসের সুবিধাও রয়েছে। এখনও এই নির্ভীক স্কিম ভারতে প্রযোজ্য রয়েছে। আপনারা চাইলে এই স্কিমের সুবিধা নিতে পারেন। কী কী সুবিধা রয়েছে এই স্কিমে? কীভাবে আবেদন করা যাবে? আবেদন করার সময় কী কী নথিপত্র লাগবে? এই ধরনের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর আপনারা পেয়ে যাবেন আমাদের আজকের এই প্রতিবেদনটিতে।

নির্ভীক স্কিম (NIRVIK Scheme) কী?

বেশি মালপত্র রপ্তানি করার জন্য রপ্তানিকারকদের ঋণের প্রয়োজন হয়। এই স্কিমের মাধ্যমে ক্ষুদ্র রপ্তানিকারকরা উচ্চ ঋণ সহজেই নিতে পারেন। যার ফলে তারা উচ্চ স্তরে রপ্তানি করতে পারেন। এর পাশাপাশি ক্ষুদ্র রপ্তানিকারকরা যাতে ভালোভাবে ব্যবসা করতে পারেন, তার জন্য নির্ভীক স্কিম (NIRVIK Scheme) উচ্চ বীমা কভারেজ অফার করে থাকে। যে কারণে ক্ষুদ্র রপ্তানিকারকরা তাঁদের পলিসি প্রিমিয়াম কমানোর সুযোগ পেয়ে যান।

এই যোজনার বিভিন্ন সুবিধা ক্ষুদ্র রপ্তানিকারকদের লাভবান করে। যা তাঁদের ব্যবসায় অনেক সাহায্য করে। যার ফলে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। আর অনেকেই ব্যবসার দিকে আকৃষ্ট হন। নির্ভীক স্কিম (NIRVIK Scheme) রপ্তানিকারকদের সুবিধার জন্যই ডিজাইন করা হয়েছে। সরকার ক্ষুদ্র রপ্তানিকারকদের দিকে বিশেষ নজর রেখে এই যোজনা চালু করেছিল।

নির্ভীক স্কিম (NIRVIK Scheme)-এর বৈশিষ্ট্য :-

এই স্কিমের বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। সেগুলি হলো –

  • নির্ভীক স্কিম (NIRVIK Scheme) মূলধন ও সুদের ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বীমা কভারেজ প্রদান করে।
  • রপ্তানির আগে ও পরে বীমা কভারেজ দুই ভাবেই ক্রেডিট হয়ে থাকে।
  • তবে যাঁরা হিরে, বিভিন্ন ধরনের অলংকার ও রত্ন খাতে ঋণ নেবে তাঁদের ঋণের পরিমাণ যদি ৮০ কোটি টাকার বেশি হয়, তাহলে তাঁদের প্রিমিয়ামের পরিমাণ অন্যান্য ঋণ গ্রহীতাদের তুলনায় বেশি হবে। কারন এই খাতে ক্ষতির সম্ভাবনা অন্যান্য খাতের তুলনায় বেশি।
  • যে সমস্ত রপ্তানিকারকরা ৮০ কোটি টাকার কম ঋণ নেবেন, তাঁদের প্রিমিয়ামের পরিমাণ হবে ০.৬০। অপরদিকে যাঁদের ঋণের পরিমাণ ৮০ কোটি টাকার বেশি হবে, তাদের বার্ষিক প্রিমিয়ামের পরিমাণ হবে ০.৭২।

নির্ভীক স্কিম (NIRVIK Scheme)-এ আবেদনের যোগ্যতা :-

যেকোনো স্কিম ও যোজনায় আবেদনের জন্য নির্দিষ্ট কিছু মাপদন্ড থাকে। ঠিক তেমনভাবে নির্ভীক স্কিম (NIRVIK Scheme)-এ আবেদনের জন্য কিছু শর্ত রয়েছে। যেমন-

  • আবেদনকারীর বয়স ১৮ বছরের বেশি হতে হবে।
  • আবেদনকারীকে ভারতবর্ষের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
  • আবেদনকারীর নিজের নামে বৈধ ও চালু ব্যাংক একাউন্ট থাকতে হবে।
  • কেবলমাত্র ক্ষুদ্র রপ্তানিকারকরাই নির্ভীক স্কিম (NIRVIK Scheme)-এ আবেদন করতে পারবেন।

নির্ভীক স্কিম (NIRVIK Scheme)-এ কেন আবেদন করবেন?

  1. এই স্কিমে আবেদন করলে কম সুদে উচ্চ মাত্রায় ঋণ নিতে পারবেন ক্ষুদ্র রপ্তানিকারকরা।
  2. তাঁরা সহজেই প্রয়োজন অনুযায়ী ঋণ নিতে পারবেন।
  3. এই স্কিমে আপনারা বীমা কভারেজের মতো সুবিধা পেয়ে যাবেন। এছাড়া ঋণের খরচ আপনাদের বেশ খানিকটা কম হবে। মোট কথা আপনারা বেশি টাকার ঋণ নিলেও আপনাদের মাথার ওপর ঋণের বোঝা ও সুদের পরিমাণ বেশি হবে না।
  4. খুবই সহজ পদ্ধতি হওয়ার কারণে ব্যবসা করতে সুবিধা হবে ক্ষুদ্র রপ্তানিকারকদের। এতে বিশেষ সুবিধা হয়ে থাকে MSME-দের।
  5. এই স্কিমের মাধ্যমে ভারতীয় রপ্তানি দ্রব্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি করা সহজ হবে।

নির্ভীক স্কিম (NIRVIK Scheme)-এ আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র :-

  1. পরিচয় পত্র – বৈধ পরিচয় পত্র হিসেবে আধার কার্ড ও ভোটার কার্ডের ফটোকপি জমা করা যাবে।
  2. ব্যবসা নিবন্ধনের নথি – যিনি আবেদন করছেন তাঁর যে সত্যিই ব্যবসা রয়েছে এবং তিনি যে সেই ব্যবসার মালিক তা প্রমাণ করার জন্য ব্যবসা নিবন্ধনের নথি লাগবে।
  3. ব্যবসায়িক প্যান কার্ড – রপ্তানি কোম্পানির নামে জারি হওয়া ব্যবসায়িক প্যান কার্ড এক্ষেত্রে লাগবে।
  4. জিএসটি সার্টিফিকেট – যেকোনো বৈধ ব্যবসার ক্ষেত্রে জিএসটি সার্টিফিকেট লাগে। সেই সার্টিফিকেটের ফটোকপি নির্ভীক স্কিম (NIRVIK Scheme)-এ আবেদনের সময় লাগবে।
  5. বীমা পলিসি সংক্রান্ত নথি – মালিক ও কোম্পানির বীমা পলিসি সংক্রান্ত সকল নথি আবেদনের সময় লাগবে।
  6. ঋণের নথি – মালিক অথবা কোম্পানির নামে যদি কোনো বিদ্যমান ঋণ থাকে, তাহলে সেই ঋণ সংক্রান্ত যাবতীয় নথি আবেদনের সময় জমা করতে হবে‌।

নির্ভীক স্কিম (NIRVIK Scheme)-এ আবেদনের পদ্ধতি :-

এটি খুবই উপকারী একটি স্কিম বলেই আমাদের মনে হচ্ছে। তবে সরকারের তরফ থেকে এখনো পর্যন্ত নির্ভীক স্কিম (NIRVIK Scheme) চালু করা হয়নি। এই স্কিমে আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হলেই আমরা আপনাদের জানিয়ে দেবো। তার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটে চোখ রাখতে ভুলবেন না‌।

নির্ভীক স্কিমের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক :

নির্ভীক স্কিমের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট লিঙ্কClick Here
WhatsApp Channel Follow Now
Telegram Channel Follow Now
Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *