কৃষক বন্ধু প্রকল্প: কৃষকদের প্রতি বছর 10 হাজার টাকা দিচ্ছে রাজ্য সরকার, দেখে নিন কারা আবেদন করতে পারবেন

Arpita Paul
Krishak Bandhu Scheme
WhatsApp Channel Follow Now

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে জনকল্যাণের স্বার্থে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই বিভিন্ন প্রকল্পগুলোর মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য প্রকল্প গুলি হল লক্ষী ভান্ডার, কর্ম সাথী, স্বাস্থ্য সাথী , কৃষক বন্ধু প্রকল্প(Krishak Bandhu Scheme)।

আজকে আমরা কৃষক সাথী প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব অর্থাৎ এই প্রকল্পটি কি, কারা আবেদন করতে পারেন, সুবিধা কি কি এবং কত টাকা বার্ষিক ভাতা হিসেবে পাওয়া যায়। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক।

কৃষক বন্ধু প্রকল্পের বিবরণ / Overview of Krishak Bandhu Scheme

প্রকল্পের নামকৃষক বন্ধু প্রকল্প
কোন কোন রাজ্যে চালু হয়েছেপশ্চিমবঙ্গ
প্রকল্প চালু করেছেনমুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
কোন বিভাগের অন্তর্গতপশ্চিমবঙ্গ সরকারের কৃষি বিভাগ
প্রকল্প শুরুর তারিখ১লা জানুয়ারি ২০১৯
প্রকল্পের বর্তমান স্ট্যাটাস2024 এ সক্রিয় আছে
কারা আবেদন করতে পারবেনকৃষক সম্প্রদায়
আবেদনের বয়স সীমা১৮ থেকে ৬০
কি কি সুবিধা পাবেন১) ১ একরের কম চাষযোগ্য সময় থাকলে বার্ষিক ৪ হাজার টাকা।
২) ১ একর বা তার অধিক চাষযোগ্য জমি থাকলে বার্ষিক ভাতা হিসেবে ১০ হাজার টাকা।
আবেদনের স্ট্যাটাস চেক লিঙ্কClick Here
অফিসিয়াল ওয়েবসাইটClick Here

কৃষক বন্ধু প্রকল্প কি(What is Krishak Bandhu Scheme) ?

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় ইতিমধ্যে রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন প্রকল্প প্রচলন করা হয়েছে। রাজ্যের গরিব কৃষি সম্প্রদায় সমস্যার কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রী তরফ থেকে তাদের জন্য কৃষক বন্ধু প্রকল্পের আয়োজন করেছে। ১লা জানুয়ারি ২০১৯ থেকে কৃষক সম্প্রদায়ের চাষাবাদ কে আরো লাভজনক করে তুলতে এবং কৃষকদের আর্থিকভাবে সহায়তা করতে এই প্রকল্পের আয়োজন করা হয়েছে। অবশ্য 2021 সালে সাধারণ থেকে এই অর্থের পরিমাণ বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হয়েছে।

কৃষক বন্ধু প্রকল্পের সুবিধা / Benefits of Krishak Bandhu Scheme

কৃষকরা এই প্রকল্পের নাম তো করলে যে সকল সুবিধা গুলি পাবেন তা হল –

  • কৃষকদের নিজস্ব এক একর বা তার অধিক চাষযোগ্য জমি থাকলে বার্ষিক ভাতা হিসেবে ১০ হাজার টাকা পাবেন।
  • কৃষকদের এক একরের কম চাষযোগ্য সময় থাকলে বার্ষিক ৪ হাজার টাকা ভাতা হিসেবে পাবেন।
  • ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী কোনো কৃষক এ প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করার পর অকাল মৃত্যু হলে তার পরিবার ক্ষতিপূরণ বাবদ ২ লক্ষ টাকা পাবে।

কৃষক বন্ধু প্রকল্পে কারা আবেদন করতে পারবেন(Who can apply for the Krishak Bandhu Scheme) ?

  • কৃষকদের নিজস্ব নামে সংশ্লিষ্ট চাষযোগ্য জমির পর্চা বা বন বিভাগের পাট্টা থাকতে হবে বা ভাগ চাষী হলে জমির নিবন্ধীকরণ থাকতে হবে।
  • কৃষকদের নিজস্ব নামে জমি না থাকলেও প্রকৃত মালিক এর উত্তরাধিকারীরা এর সুযোগ পাবেন।
  • কৃষকদের নিজস্ব নামে ছবি না থাকলে সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জমির দলিল বা দানপত্র এবং স্থানীয় পঞ্চায়েতের ওয়ারিশ‌ সার্টিফিকেট থাকবে।
  • যে ব্লকে কৃষকের ভোটার কার্ড বা আধার কার্ডের অধিকার আছে সেই ব্লক থেকেই কেবল কৃষকরা এই প্রকল্পের জন্য দলিল নিয়ে আবেদন করতে পারবেন।

কৃষক বন্ধু প্রকল্পে কারা আবেদন করতে পারবেন না(Who can not apply for the Krishak Bandhu Scheme) ?

প্রতিরা নিম্নলিখিত শর্তগুলি পূরণ না করলে সেক্ষেত্রে এই প্রকল্পে আবেদন করতে পারবেন না –

  • প্রার্থীর নিজস্ব চাষযোগ্য জমির আইন সম্মত দলিল বা পর্চা না রাখলে আবেদন করতে পারবেন না।
  • জমির দলিলের সঙ্গে পঞ্চায়েতের ওয়ারিশ পত্র না থাকলে আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়।
  • আধার কার্ডে লিখিত ঠিকানার বহির্ভূত অন্য কোন ঠিকানায় প্রার্থীর চাষযোগ্য জমি থাকলে সে ক্ষেত্রে তিনি আবেদন করতে পারবেন না।
  • প্রার্থীর নিজস্ব ব্যাংক একাউন্ট থাকতে হবে জনধন একাউন্ট থাকলে এপ্লাই করতে পারবেন না।

কৃষক বন্ধু প্রকল্পে আবেদন করার  জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস / Documents required to apply for Krishak Bandhu Scheme

যে সকল ইচ্ছুক প্রার্থীরা কৃষক বন্ধু প্রকল্পে আবেদন করতে চান তারা অবশ্যই নিম্নলিখিত ডকুমেন্টস গুলি আবেদনের সময় সঙ্গে রাখবেন –

  1. চাষের জমির পর্চা বা নথি বা দলিল
  2. প্রার্থীর পরিচয় পত্র হিসেবে আধার কার্ড
  3. প্রার্থীর নাগরিকতার প্রমাণ স্বরূপ ভোটার কার্ড
  4. প্রার্থী নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্টের প্রথম পৃষ্ঠার জেরক্স কপি ( জনধন একাউন্ট হলে চলবে না)
  5. ব্যাংক একাউন্টের সঙ্গে আধার কার্ড অবশ্যই সংযুক্ত করা থাকতে হবে।
  6. প্রার্থীর নিজস্ব পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
  7. প্রার্থীর স্থানীয় বাসিন্দার প্রমাণস্বরূপ প্রমান

কৃষক বন্ধু প্রকল্পটিতে আবেদন করার পদ্ধতি/ How to apply in Krishak Bandhu Scheme

প্রথমত বলে রাখি অন্যান্য প্রকল্পগুলির মত কৃষক বন্ধু, প্রকল্পে আবেদনের জন্য আপনি অফলাইন এবং অনলাইন উভয়ের মাধ্যমেই প্রদান করতে পারেন।

অফলাইনে আবেদন পদ্ধতি

অফলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে আপনাকে আপনার বাড়ির নিকটস্থ দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে যোগাযোগ করতে হবে সেখান থেকে কৃষক বন্ধু প্রকল্পের জন্য একটি ফর্ম এবং পাশাপাশি আরো দুটি জরুরী ফর্ম দেবে। সে ক্ষেত্রে দুটি জরুরি ফর্ম ক্যাম্পে না পাওয়া গেলে আপনাকে অনলাইনে ডাউনলোড করে তা পূরণ করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে জমা করতে হবে।

অনলাইনে আবেদন পদ্ধতি

  1. অনলাইন মাধ্যমে আবেদন করতে হলে আপনাকে প্রথমে কৃষক বন্ধু প্রকল্পের অফিসিয়াল পোর্টাল প্রবেশ করতে হবে।
  2. এরপর আপনার যাবতীয় প্রয়োজনীয় তথ্যগুলি এবং রেজিস্টার ইমেইল আইডি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ করুন।
  3. এরপর আপনার ফোন নাম্বারে একটি otp যাবে otp টি পুনরায় রেজিস্ট্রেশন ফর্মে টাইপ করে সাবমিট করুন।
  4. রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ হওয়ার পর আপনি একটি আইডি ও পাসওয়ার্ড পেয়ে যাবেন যা দিয়ে আপনি পুনরায় লগইন করে আবেদনপত্র পূরণ করতে পারবেন।
  5. লগইন করে আপনি আপনার যাবতীয় প্রয়োজনীয় তথ্যগুলি সাবধানতার সহকারে আবেদনপত্র পূরণ করুন।
  6. প্রয়োজনীয় নথি গুলি জেপিইজি ফরমেটে নির্দিষ্ট সাইজের মধ্যে আপলোড করুন।
  7. আবেদনের শেষে সম্পূর্ণ আবেদন পত্রটি একবার চেক করে নিন এবং সবশেষে ফাইনাল সাবমিট অপশন এ ক্লিক করুন।

কৃষক বন্ধু প্রকল্পের আবেদনের স্ট্যাটাস চেক করার পদ্ধতি / Krishak Bandhu Scheme Application Status Check

আপনার যদি কৃষক বন্ধু প্রকল্পের নাম লতাভুক্ত থাকে এবং এখনো পর্যন্ত যদি ভাতা না পেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই নিম্নলিখিত উপায় আপনার প্রকল্পের বর্তমান স্ট্যাটাস চেক করতে পারেন।

  1. প্রথমে কৃষক বন্ধু প্রকল্পের অফিসিয়াল পোর্টালে প্রবেশ করুন এবং আপনার নিজস্ব আইডি পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।
  2. লগইন করার পর ড্যাশবোর্ডে হোম অপশন আসবে সেখানে ক্লিক করলে অ্যাপ্লিকেশনের উপরে বাঁ দিকে স্ট্যাটাস চেকের একটি অপশন চলে আসবে।
  3. এরপর আপনার নিবন্ধিত আধার বা ভোটার কার্ডের নাম্বারটি স্ট্যাটাস চেকের জন্য টাইপ করলে আপনার আবেদনের যাবতীয় স্ট্যাটাস অর্থাৎ কবে টাকা ঢুকবে বা আবেদনের কোন পর্যায়ে আপনার আপনার আবেদনপত্রটি রয়েছে তা জানতে পারবে।

কৃষক বন্ধু প্রকল্পের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক:

কৃষক বন্ধু প্রকল্পেরঅফিসিয়াল ওয়েবসাইট লিঙ্কClick Here
কৃষক বন্ধু প্রকল্পের বিজ্ঞপ্তি ডাউনলোড করুনClick Here
কৃষক বন্ধু প্রকল্পের অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করার পদ্ধতিClick Here
কৃষক বন্ধু প্রকল্পের আবেদনের স্ট্যাটাস চেক করার লিঙ্কClick Here
কৃষক বন্ধু প্রকল্প সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন:

1) কৃষক বন্ধু কিভাবে চেক করব?

কৃষক বন্ধু, প্রকল্পে আবেদনের পর আবেদনের স্ট্যাটাস চেক করতে হলে আপনাকে krishakbandhu.net ও তাহলে প্রবেশ করে আপনার রেজিস্টার্ড আধার বা ভোটার কার্ড দিয়ে বর্তমান এপ্লিকেশন স্ট্যাটাস চেক করতে পারেন।

2) কৃষক বন্ধু করতে গেলে কি কি লাগবে?

  1. প্রার্থীর এ জমির নিজস্ব নথি বা পর্চা
  2. দলিলের সঙ্গে পঞ্চায়েতের ওয়ারিশপত্র
  3. আধার কার্ড , ভোটার কার্ড
  4. প্রার্থীর ব্যাংক একাউন্টের প্রথম পৃষ্ঠা জেরক্স
  5. প্রার্থীর নিজস্ব পাসপোর্ট সাইজের ছবি

3) কৃষক বন্ধু দ্বিতীয় কিস্তির টাকা কবে ঢুকবে?

কৃষক বন্ধু, প্রকল্পে কৃষকরা কোন মৌসুমে চাষ করছেন তার ওপর নির্ভর করে টাকা একাউন্টে ঢুকবে। রবি শস্যের টাকা নভেম্বর মাসে এবং খারিফ শস্যের টাকা জুন মাসে কৃষকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঢুকবে।

4) কৃষক বন্ধু টাকা ঢুকেছে কিনা কিভাবে দেখবো?

কৃষক বন্ধু প্রকল্পের টাকা ঢুকেছে কিনা তা আপনি কৃষক বন্ধু প্রকল্পের অফিসিয়াল পোর্টাল krishakbandhu.net এ প্রবেশ করে দেখতে পারেন।

WhatsApp Channel Follow Now
Telegram Channel Follow Now
Share This Article
Leave a comment