khadya Sathi Scheme: ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়, পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি”- সুকান্ত ভট্টাচার্য এই লাইন দুটির মাধ্যমে কী বোঝাতে চেয়েছেন? উক্ত দুটি লাইনের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে পৃথিবীর নির্মম বাস্তবতা। ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে কোনো সৌন্দর্য প্রতিভাত হয় না। মানুষ যখন শান্তিতে থাকে অর্থাৎ যখন অন্ন বস্ত্র বাসস্থানের ন্যূনতম চাহিদা পূরণ হয়, তখনই সে শৌখিন হয়ে ওঠে।
পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশেষ উদ্যোগে ও অনুপ্রেরণায় খাদ্য সাথী প্রকল্প চালু করা হয়। মানুষ দুবেলা পেট ভরে দুমুঠো খেতে পারবে সেই ব্যবস্থাই করেছেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য যেটা প্রথম প্রয়োজন।
খাদ্য সাথী প্রকল্পের বিবরণ / Overview of Khadya Sathi Scheme
প্রকল্পের নাম | খাদ্য সাথী |
কোন কোন রাজ্যে চালু হয়েছে | পশ্চিমবঙ্গ |
প্রকল্প শুরু করেছেন | মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় |
কোন বিভাগের অন্তর্গত | খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তর |
প্রকল্প শুরুর তারিখ | 27 শে জানুয়ারি 2016 |
প্রকল্পের বর্তমান স্ট্যাটাস | 2024 এ চালু আছে |
কারা আবেদন করতে পারবেন | পশ্চিমবঙ্গের রেশন কার্ডধারী |
আবেদনের বয়স সীমা | নেই |
কি কি সুবিধা পাবেন | 1) চাল প্রতি কেজি 2 টাকা 2) গম প্রতি কেজি 2 টাকা 3) স্বল্পমূল্যে খাদ্যশস্য |
আবেদনের স্ট্যাটাস চেক লিঙ্ক | Click Here |
অফিসিয়াল ওয়েবসাইট | Click Here |
খাদ্য সাথী প্রকল্প কি(What is Khadya Sathi Scheme) ?
২০১৬ সালে ২৭ শে জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে চালু করা হয় পশ্চিমবঙ্গ খাদ্য সাথী প্রকল্প(Khadya Sathi Prakalpa)। এই প্রকল্পে মূলত পশ্চিমবঙ্গে যে সমস্ত অভাবী মানুষজন রয়েছে তাঁরা যাতে খাদ্য শস্যের অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন। সকলের জন্য খাদ্য বরাদ্দ হোক এমন কথা চিন্তাভাবনা করেই এই প্রকল্পের সূচনা। এই প্রকল্পের আওতায় গ্রাহকদের একটি বিশেষ কার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে যে কার্ড থাকলে রেশন দোকান থেকে বাজারে থেকে কম মূল্যে খাদ্যশস্য কিনতে পারবেন।
খাদ্য সাথী প্রকল্পের মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছেন শুধুমাত্র অনগ্রসর পরিবারই নয় বাংলার সমস্ত মানুষ। মূলত আর্থিক দিক থেকে অনগ্রসর পরিবারগুলিকে স্বাবলম্বী করে তোলার জন্যই এই প্রকল্প। মহামারীর সময় থেকে এই পদক্ষেপ কত মানুষের জীবনধারণের সাহায্য করেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না
খাদ্য সাথী প্রকল্পের সুবিধা / Benefits of Lakshi Bhandar Scheme
- ২ টাকা কেজি দরে চাল।
- ২ টাকা কেজি দরে গম।
- শারীরিক ডিজিটাল রেশন কার্ড বয়ে বেড়ানোর প্রয়োজনীয়তা নেই।
- সমস্ত পদ্ধতিটি অনলাইনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত।
খাদ্য সাথী প্রকল্পের আওতায় কোন রেশন কার্ডে কত পরিমাণে খাদ্যশস্যে পাবেন(How much food grains will you get in any ration card under the Food Sathi scheme) ?
আসুন দেখে নেওয়া যাক এক নজরে সেগুলি:
- এ এ ওয়াই(AAY): প্রতি পরিবার পিছু ২১ কেজি চাল ও ১৮ কেজি গম।
- পিপি এইচ ও এস পি এইচ(PHH/SPHH): এই কার্ডে মাথাপিছু ৩ কেজি চাল ২ কেজি গম বরাদ্দ রয়েছে।
- আর এস কে ওয়াই ১(RKSY-I): এই কার্ডে মাথাপিছু ৫ কেজি চাল বরাদ্দ রয়েছে ।
- আর এস কে ওয়াই ২(RKSY-II): এই কার্ডে মাথা কিছু ২ কেজি চাল বরাদ্দ করা হয়েছে।
খাদ্য সাথী প্রকল্পটিতে আবেদনের জন্য যোগ্যতা / Eligibility Criteria for Khadya Sathi Scheme
- আবেদনকারীর বৈধ রেশন কার্ড থাকতে হবে।
- ভারতের নাগরিক হওয়া আবশ্যিক।
- পশ্চিমবঙ্গের একজন বাসিন্দা হতে হবে।
- বিপিএল ও ই ডব্লিউ এস বিভাগের অধীনে যারা রয়েছেন তাদের জন্য সুবিধা।
কারা খাদ্য সাথী প্রকল্পের সুবিধা পাবেন না(Who will not get the benefits of Khadya Sathi Scheme) ?
- সরকারি চাকরির ধারক হলে তাঁরা এই প্রকল্পের আওতা থেকে বঞ্চিত হবেন।
খাদ্য সাথী প্রকল্পে আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস/ Documents required to apply for Khadya Sathi Scheme
- স্থায়ী বাসস্থানের প্রমাণ পত্র জমা দিতে হবে।
- আধার কার্ড জমা দিতে হবে।
- রেশন কার্ড জমা দিতে হবে।
- ভোটার কার্ড জমা দিতে হবে।
- আবেদনকারীর বয়স যদি পাঁচ বছরের কম হয় সে ক্ষেত্রে তাদের জন্ম শংসাপত্র প্রয়োজন।
- আয়ের শংসাপত্র জমা দিতে হবে। খাদ্য সাথী প্রকল্পে আবেদন পদ্ধতি :
অনলাইন কিংবা অফলাইন দুটি মাধ্যমেই আবেদন করতে পারবেন সকলে। আসুন দেখে নেওয়া যাক সেগুলি কিভাবে করবেন।
খাদ্য সাথী প্রকল্পটিতে আবেদন করার পদ্ধতি/ How to apply in Khadya Sathi Scheme
ইচ্ছুক প্রার্থীরা খাদ্য সাথী প্রকল্পের(Khadya Sathi Prakalpa) জন্য অনলাইন অফলাইন এর মাধ্যমে আবেদন করতে পারেন। আজকে আপনাদের সঙ্গে অনলাইন এবং অফলাইন দুটি পদ্ধতিতেই কিভাবে আবেদন করবেন সেদিন বিস্তারিত আলোচনা করব-
অফলাইনে আবেদন পদ্ধতি
অফলাইনের মাধ্যমে ও খাদ্য সাথী প্রকল্পে আবেদন করা সম্ভব। তার জন্য প্রথমেই অনলাইন থেকে আবেদন পত্রটি ডাউনলোড করতে হবে আবেদনকারীকে।
ডাউনলোড করার পর সম্পূর্ণ আবেদন পত্রটি পূরণ করতে হবে এবং সাথে প্রয়োজনীয় নথিগুলো সংযোজন করতে হবে। এরপরে সংশ্লিষ্ট জায়গায় সেগুলি জমা দিতে হবে। পরবর্তী ক্ষেত্রে সেগুলি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তারা যাচাই করা হবে।
অনলাইনে আবেদন পদ্ধতি
- খাদ্য সরবরাহ দপ্তরের নিজস্ব একটি পোর্টাল রয়েছে, ।
- সেই পোটালে গিয়ে ই সিটিজেন বিকল্পটি বেছে নিতে হবে।
- এরপর নতুন পেজে গিয়ে ডিজিটাল রেশন কার্ড বিকল্পটি বেছে নিতে হবে ।
- বিকল্পটি বেছে নেওয়ার পর আবেদনকারীকে নিজের জেলার নাম ও পৌরসভা নির্বাচন করতে হবে।
- এরপর আবেদনপত্রটির সম্পূর্ণ পূরণ করে সাথে সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি গুলি স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে। আপলোড হয়ে গেলে সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে।
- আবেদন পত্রটি জমা দেবার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্বারা সেটি যাচাই করা হবে।
- সফলভাবে যাচাই করনের পরই রেশন কার্ড ইস্যু করা হবে আবেদনকারীকে।
- পরবর্তী ক্ষেত্রে ওই রেশন কার্ডের মাধ্যমেই আবেদনকারী এই খাদ্য সাথী প্রকল্পের সুবিধা পাবেন।
খাদ্য সাথী প্রকল্পের নোডাল বিভাগের যোগাযোগের নম্বর:
পশ্চিমবঙ্গ খাদ্য সাথী প্রকল্পের নোডাল বিভাগের হেল্পলাইন নম্বর :- ১৮০০৩৪৫৫৫০৫/ ১৯৬৭. আবেদনকারীদের এ বিষয়ে আরো বিশদে জানার জন্য চাইলে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮ টার মধ্যে উক্ত নম্বরে যোগাযোগ করতে পারবেন ।
খাদ্য সাথী প্রকল্পের আবেদনের স্ট্যাটাস চেক করার পদ্ধতি / Khadya Sathi Scheme Payment Status Check
- এই প্রকল্পের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে।
- পরবর্তী ধাপে নিজের মোবাইল নম্বরটি দিতে হবে।
- মোবাইল নম্বরে যে ওটিপিটি আসবে সেটি লিখতে হবে
- এরপরে একাউন্টের লগইন বিকল্পটি বেছে নিয়ে লগইন করতে হবে।
- লগইন করার সাথে সাথে দেখা যাবে আপনার আবেদনের স্থিতি বিকল্পটি বেছে নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। সেই বিকল্পটি বেছে নিলেই খুব সহজেই আপনার আবেদনের স্থিতি জানতে পারবেন।
এই খাদ্য সাথী প্রকল্প পেয়ে এখনো পর্যন্ত কত মানুষ উপকৃত হয়েছেন ?
পশ্চিমবঙ্গ সরকার এখনো পর্যন্ত রাজ্যের প্রায় ৭.৪৯ কোটি মানুষকে এই ২টাকা কেজি দরে চাল গম সরবরাহ করে চলেছেন, যাতে রাজ্যের দারিদ্র সীমার নিচে থাকা মানুষদের কাছে বাজারে থেকে কম মূল্যে এমনকি বিনামুল্যে খাদ্যশস্য পৌঁছায়।
জনগণের জন্য ভর্তুকির মূল্যে খাদ্যশস্য বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে খাদ্য সাথী প্রকল্পের হাত ধরে। এই প্রকল্প যে মানুষের জীবনধারণের সাহায্য করেছে তা বলবার অপেক্ষা রাখে না।
আমাদের রাজ্যে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষরা আজ পেট ভরে দুবেলা ভাত খেতে পারছে। ওই সহায় সম্বলহীন মানুষদের পাশে পশ্চিমবঙ্গ সরকার রয়েছে এবং আগামী দিন থাকার অঙ্গীকার করেছেন। তাই আজই যারা এই প্রকল্পের আওতায় নিজের নাম নথিভুক্ত করতে পারেননি সত্তর আবেদন করে ফেলুন এবং এই প্রকল্পের সুবিধা পান।
খাদ্য সাথী প্রকল্পের কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক:
খাদ্য সাথী প্রকল্পের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট লিঙ্ক | Click Here |
খাদ্য সাথী প্রকল্পে অনলাইনে আবেদন করার লিঙ্ক | Click Here |
খাদ্য সাথী প্রকল্পের আবেদনের স্ট্যাটাস চেক করার লিঙ্ক | Click Here |