কিষান বিকাশ পত্র: পোস্ট অফিসে টাকা জমা রেখে ১০ বছরে পান ডবল টাকা, সাথে থাকছে ট্যাক্স ছাড়ের সুবিধা

Srijeeta Banerjee
Kisan Vikas Patra Scheme
WhatsApp Channel Follow Now

Kisan Vikas Patra Scheme: আজকাল মানুষ মাত্র আয় আর ব্যয়ের মধ্যেই নিজের জীবন সীমিত রাখেনি। পাশাপাশি শুরু করেছে সঞ্চয় ও বিনিয়োগ। বিনিয়োগের কথা শুনলেই অনেকে ঘাবড়ে যায়, ভাবে বিনিয়োগ করলেই বুঝি অনেক টাকা লোকসান হয়ে যাবে। কিন্তু এমনটা নয়। সঠিক খাতে বিনিয়োগ করলে আপনি লাভবানই হবেন।

তবে রাতারাতি কোটিপতি হবেন না। যে সমস্ত স্কিম দাবি করে স্বল্প সময়ে আপনাকে লাভবান করে তোলার, সেগুলি আসলে ফ্রড। ভুলেও সেই ফাঁদে পা দেবেন না‌। তবে আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি দারুন একটি বিনিয়োগের খোঁজ। সরকারি বিনিয়োগ হওয়ার দরুন আপনাদের টাকা নষ্ট হওয়ার চিন্তা করতেও হবে না।

এই প্রতিবেদনে আমরা কথা বলব কিষান বিকাশ পত্র (Kisan Vikas Patra)-এর সম্বন্ধে। এটি একটি সার্টিফিকেট সঞ্চয় প্রকল্প। ভারত সরকার ১৯৮৮ সালের ১ লা এপ্রিল এই প্রকল্প চালু করেছিল। আপনারা যে কোনো ডাকঘর থেকে সার্টিফিকেট কেনার মাধ্যমে এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে পারবেন। এতে রয়েছে সীমাহীন বিনিয়োগ করার দুর্দান্ত সুযোগ‌। কীভাবে বিনিয়োগ করবেন এই প্রকল্পে? কী কী সুযোগ-সুবিধা রয়েছে কিষান বিকাশ পত্র (Kisan Vikas Patra)-এ? কারা এই প্রকল্পের বিনিয়োগ করতে পারবে? জেনে নিন আমাদের আজকের এই প্রতিবেদনটিতে।

কিষান বিকাশ পত্র যোজনা(Kisan Vikas Patra Scheme) কী?

এটি একটি সার্টিফিকেট বিনিয়োগ প্রকল্প। এটি শুরু হয়েছিল ১৯৮৮ সালের ১ লা এপ্রিল থেকে। তখন এই প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ৫ বছর ৬ মাস মতো। মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে বিনিয়োগ করা অর্থের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে যায়। এই প্রকল্পটির এত বেশি চাহিদা দেখে ভারত সরকার ২০২৪ সালে পুনরায় কিষান বিকাশ পত্র (Kisan Vikas Patra) চালু করে। ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্প হিসেবে অল্প সময়ের মধ্যেই এটি খুব জনপ্রিয়তা লাভ করেছে‌।

এখন এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করলে ১১৫ মাসে বিনিয়োগকৃত রাশি দ্বিগুণ হবে। এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করার জন্য সার্টিফিকেটগুলি একজন সাবালক ব্যক্তি নিজের নামে কিনতে পারবেন‌। এবার তিনি চাইলে কোনো নাবালকের জন্য অথবা কোনো নাবালকের নামেও কিনতে পারবেন। তবে কোনো নাবালক নিজের নামে এই সার্টিফিকেট প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে পারবে না‌। দুজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি চাইলে জয়েন্টে এই সার্টিফিকেট প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে পারবেন।

কখন মেয়াদ পূর্তির আগে কিষান বিকাশ পত্র (Kisan Vikas Patra Scheme)-এর সার্টিফিকেটগুলি ভাঙানো যাবে?

আপনি চাইলে মেয়াদ পূর্তির আগেই আপনার বিনিয়োগ করা টাকা তুলে নিতে পারবেন। কিন্তু তার জন্য পোস্ট অফিস অথবা ব্যাংকের একজন কর্মকর্তার সম্মতিপত্র থাকতে হবে‌। আপনি চাইলে আপনার নামে নেওয়া সার্টিফিকেট অন্য কাউকে হস্তান্তর করতে পারবেন‌। তবে তার জন্য হস্তান্তরকারীকে সাবালক হতে হবে।

আর এই প্রকল্পে বিনিয়োগের নিয়ম অনুযায়ী যোগ্য হতে হবে। এই প্রকল্পের সার্টিফিকেট কেনার আড়াই বছর পর যদি হোল্ডারের মৃত্যু হয় সেক্ষেত্রে মেয়াদ পূর্তির আগেই নমিনি টাকা তুলতে পারবেন। আবার যৌথ হোল্ডারদের মধ্যে থেকে যে কোনো একজন মারা গেলে অপর হোল্ডার মেয়াদ পূর্তির আগে টাকা তুলে নিতে পারবেন।

কিষান বিকাশ পত্র যোজনার(Kisan Vikas Patra Scheme)-এ কী কী সার্টিফিকেট রয়েছে?

  1. সিঙ্গেল অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের জন্য সার্টিফিকেট :-

এই ধরনের অ্যাকাউন্ট একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি নিজের জন্য খুলতে পারবেন। এছাড়া একজন নাবালকের নামেও তিনি অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। যদি তিনি কোনো অসুস্থ ব্যক্তির অভিভাবক হন, সেক্ষেত্রেও তার নামে এই অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিটি‌। ১০ বছর বয়সী একজন নাবালক নিজের নামে এই অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে।

  1. জয়েন্ট-এ টাইপ অ্যাকাউন্ট :-

এই একাউন্ট যৌথ ভাবে তিনজন অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের নামে খোলা যেতে পারে।

  1. জয়েন্ট-বি টাইপ অ্যাকাউন্ট :-

এই অ্যাকাউন্ট সর্বাধিক তিনজন হোল্ডারের নামে জয়েন্টে খোলা যাবে।

কিষান বিকাশ পত্র যোজনার(Kisan Vikas Patra)-এ বিনিয়োগ করার যোগ্যতা :-

  1. এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করার জন্য আপনাকে ভারতের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
  2. আইনি অভিভাবক অথবা পিতামাতা নাবালক অথবা মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তির জন্য বিনিয়োগ করতে পারবেন।
  3. ন্যূনতম ১০ বছর বয়স হলে এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করা যাবে।

কিষান বিকাশ পত্র যোজনার(Kisan Vikas Patra Scheme)-এর নিয়মাবলী :-

  1. এই প্রকল্পে বিনিয়োগের জন্য কোনো সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করা নেই।
  2. একজন ব্যক্তি যত খুশি অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন।
  3. বিনিয়োগকারী ব্যক্তি সর্বনিম্ন ১ হাজার অথবা ১০০-র গুণিতকে যেকোনো পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করতে পারবেন।

কিষান বিকাশ পত্র যোজনার(Kisan Vikas Patra Scheme)-এর সুবিধা :-

  1. এই প্রকল্পে বিনিয়োগের উপর বার্ষিক ৭.৫ শতাংশ হারে সুদ পাবেন বিনিয়োগকারী।
  2. আপনি যত টাকাই বিনিয়োগ করুন না কেন ১১৫ মাস অর্থাৎ ৯ বছর ৭ মাস পর সেটি দ্বিগুণ হবে।
  3. এই প্রকল্পে আপনি যত খুশি টাকা বিনিয়োগ করতে পারবেন। এতে বিনিয়োগের কোনো সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করা নেই।
  4. আপনি নিশ্চিন্তে যেকোনো সময় অপর কোনো ব্যক্তিকে এই প্রকল্প হস্তান্তর করতে পারবেন। আবার চাইলে অন্য যে কোনো পোস্ট অফিসেও এটি স্থানান্তর করতে পারবেন।
  5. যেকোনো পোস্ট অফিসে এই প্রকল্পের অধীনে একাউন্ট খোলা যায়। এর পাশাপাশি কয়েকটি অনুমোদিত ব্যাংকেও এই প্রকল্পের সুবিধা রয়েছে।
  6. যেদিন বিনিয়োগ শুরু করবেন তার আড়াই বছর পর চাইলে সার্টিফিকেটগুলি ভাঙাতে পারবেন।

কিষান বিকাশ পত্র যোজনার(Kisan Vikas Patra Scheme)-এ আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় নথি :-

  1. আবেদনকারীর পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
  2. পরিচয় পত্র (আধার কার্ড/ ভোটার কার্ড/ পাসপোর্ট/ ড্রাইভিং লাইসেন্স)।
  3. বৈধ ঠিকানার প্রমাণপত্র (আধার কার্ড/ ভোটার কার্ড/ পাসপোর্ট/ ড্রাইভিং লাইসেন্স)।
  4. প্যান কার্ডের ফটোকপি।
  5. আধার কার্ডের ফটোকপি।
  6. বয়সের প্রমাণপত্র।
  7. জব কার্ড থাকলে সেটি।

কিষান বিকাশ পত্র যোজনার(Kisan Vikas Patra Scheme)-এ আবেদন করার পদ্ধতি :-

যেকোনো ব্যক্তি এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে পারবেন। তার জন্য নিকটবর্তী পোস্ট অফিস অথবা অনুমোদিত ব্যাংকে গিয়ে এজেন্টের সাহায্যে আবেদন করতে হবে। তবে আপনি চাইলে সরাসরিও যোগাযোগ করতে পারবেন।

এরপর সেখান থেকে আপনাকে একটি ফর্ম দেওয়া হবে। সেটি সঠিকভাবে পূরণ করবেন।

সমস্ত নথি চাওয়া হবে সেগুলির ফটোকপি ফর্মটির সাথে অ্যাটাচ করে দেবেন।

এরপর ঘোষণাপত্র এবং মনোনয়নের বিবরণ সঠিকভাবে পূরণ করবেন।

পুরো ফর্ম ভালোভাবে ফিলাপ করার পর কর্তৃপক্ষের কাছে জমা করতে হবে। ফর্ম জমা করার সময় বিনিয়োগের প্রাথমিক পরিমাণ দিতে হবে। ফর্ম জমা দেওয়ার সময় যে সমস্ত নথি জমা করবেন, সেগুলি অবশ্যই নিজের কাছে ভালোভাবে রাখবেন।

প্রধানমন্ত্রী কিষান বিকাশ পত্র যোজনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক :

প্রধানমন্ত্রী কিষান বিকাশ পত্র যোজনার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট লিঙ্কClick Here
প্রধানমন্ত্রী কিষান বিকাশ পত্র যোজনার আবেদন পত্র ডাউনলোড লিঙ্কClick Here

WhatsApp Channel Follow Now
Telegram Channel Follow Now
Share This Article
1 Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *