West Bengal Government Schemes: পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে একটি স্বচ্ছ ধারণা নেব আমরা আজকের প্রতিবেদনে।আমরা অনেকেই অনেক সময় সঠিকভাবে জানি না পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ঠিক কতগুলি সরকারি প্রকল্প রয়েছে। আমরা যারা চাকরিপ্রার্থী তাদের চাকরি সংক্রান্ত প্রশ্নের মধ্যে কখনো কখনো এই প্রশ্ন এসে থাকে, তাই আজকের প্রতিবেদনটি সেই সমস্ত বিষয়গুলি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা দেবে আমাদের। আমাদের সকলেরই জেনে রাখা প্রয়োজন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে আসুন দেখে নিই সেই তালিকা গুলি কী কী।
তাহলে এবার দেখে নিন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প গুলি কী কী । List of West Bengal Government Schemes
Download Central Government Schemes List | Click Here |
কেন্দ্র সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পগুলির তালিকা ডাউনলোড করুন | Click Here |
১.কন্যাশ্রী প্রকল্প
এই প্রকল্প মূলত সমাজে মেয়েদের বাল্যবিবাহ রোধ ও মেয়েদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে চালু করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৩ সালের ৮ই মার্চ এই প্রকল্প চালু করেছিলেন। এই প্রকল্পে ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী পড়ুয়াদের মাসিক ১০০০ টাকা করে বৃত্তি পাবে এবং ১৮ বছর বয়সের পর এককালীন ২৫ হাজার টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। বর্তমানে এই প্রকল্প ইউনেস্কো অর্থাৎ বিশ্ব দরবারেও স্বীকৃতি পেয়েছে, তাই প্রতি বছর ১৪ ই আগস্ট রাজ্যজুড়ে কন্যাশ্রী দিবস পালিত হয়।
২.শিক্ষাশ্রী প্রকল্প
২০১৪ সালে রাজ্য সরকার এই প্রকল্প চালু করে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্যই হল পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত যে সমস্ত তপশিলি জাতি বা উপজাতি সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা রয়েছে। তাদের পড়াশোনার জন্য আর্থিক সাহায্য প্রদান করা।
৩.মাতৃযান প্রকল্প
এ প্রকল্পটির সূচনা হয় ২০১১ সালে এটি মূলত গর্ভবতী মহিলাদের উদ্দেশ্যেই চালু করা হয়। সমাজের গর্ভবতী মহিলারা যাতে হাসপাতালে পৌঁছানোর জন্য অ্যাম্বুলেন্সের পরিষেবা সঠিক সময় পান সেই উদ্দেশ্যেই এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে।
৪.যুবশ্রী প্রকল্প
২০১৩ সালে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে যুবশ্রী প্রকল্প সূচনা হয়। এ প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্যই হল যুব সম্প্রদায়কে সাহায্য করা। যুব সম্প্রদায়েরকে তার জন্য রাজ্য শ্রম দপ্তরের অধীনে এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংকে নিজের নাম নথিভুক্ত করতে হবে এবং আবেদনকারীরা মাসিক ১৫০০ টাকা করে ভাতা পাবেন রাজ্য সরকারের তরফ থেকে।
৫.শিশু সাথী প্রকল্প
এই প্রকল্পের সূত্রপাত হয় ২০১৩ সালে মূলত সমাজের দরিদ্র পরিবারের, যারা ১২ বছরের কম বয়সের শিশু রয়েছে তাদের হার্টের অস্ত্রোপচার যাতে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করানো যায় তার ব্যবস্থার জন্যই এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে।
৬.ঐক্যশ্রী প্রকল্প
২০১৪ সালে রাজ্য সরকার এই প্রকল্পটি চালু করেন সমাজের সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে, যাতে তাদের পড়াশোনা তাঁরা সঠিকভাবে চালিয়ে যেতে পারে। তার জন্য ঐক্যশ্রী প্রকল্পের হাত ধরে স্কলারশিপের ব্যবস্থা করা হয়।
৭.গতিধারা প্রকল্প
সমাজের কর্মহীন যুবক-যুবতীদের জন্য রাজ্য সরকার উদ্যোগী হয়ে ওঠেন, তাই ২০১৪ সালে তাদের উদ্দেশ্যে গতিধারা প্রকল্পের সূচনা করেন। এই প্রকল্পের আওতায় কর্মহীন যুবক যুবতীরা চাইলে তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য বাণিজ্যিক গাড়ি কিনতে পারবেন।তার জন্য ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সহায়তা করা হবে সরকারের তরফ থেকে।
৮.সবুজ সাথী প্রকল্প
২০১৫ সালে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্কুল পড়ুয়াদের জন্য মূলত এই প্রকল্পের ঘোষণা করেন । স্কুলের নবম দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের সবুজ সাথী প্রকল্পের তরফ থেকে একটি করে সাইকেল দেওয়ার কথা বলা হয়।
৯.কর্ম তীর্থ প্রকল্প
২০১৪ সালে সমাজের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের জন্য এটি প্রকল্প চালু করা হয় যার নাম কর্ম তীর্থ প্রকল্প। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল এই সমস্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা তাদের উৎপাদন করা দ্রব্যসামগ্রী, যাতে গ্রামের মানুষদের কাছে সহজে বিক্রি করতে পারে তার ব্যবস্থা করা।
১০.সুফল বাংলা প্রকল্প
আমাদের ভারতবর্ষ কৃষি প্রধান দেশ, তাই আমাদের দেশের জনসংখ্যার একটি বিরাট অংশ হল কৃষক। তাদের উদ্দেশ্যেই এই প্রকল্প। চাষীদের কাছ থেকে লাভজনক দামে সরাসরি কৃষিজ পণ্য সংগ্রহ করে যাতে গ্রাম্য ও শহরের মানুষের কাছে সঠিক দামে সেগুলি পৌঁছে দেওয়া যায় তারই ব্যবস্থা করা হয়েছে সুফল বাংলা প্রকল্পের মাধ্যমে।
১১.সামাজিক সুরক্ষা যোজনা
সমাজের দারিদ্র্য সীমায় থাকা মানুষদের জন্য সরকার সদা সর্বদা তৎপর। এবার তাদের উদ্দেশ্যেই ২০১৪ সালে প্রকল্প আনে রাজ্য সরকার যার নাম সামাজিক সুরক্ষা যোজনা। দরিদ্র পরিবারের কোন ব্যক্তি যদি দুর্ঘটনায় মারা যায় তাদের পরিবারকে যাতে আর্থিকভাবে সাহায্য করা যায় তারই ব্যবস্থা করা হয়েছে সামাজিক সুরক্ষা যোজনায়। এতে করে নিহতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা ও আহতদের পরিবারকে ১ লক্ষ টাকা করে সাহায্য করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে ।
১২.খাদ্য সাথী প্রকল্প
সমাজের অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল মানুষের কথা ভেবে ২০১৬ সালে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করে খাদ্য সাথী প্রকল্প। সবাই যাতে দুবেলা দুমুঠো পেট ভরে ভাত খেতে পারে তার জন্যই এই প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত পরিবারের মাথাপিছু দু টাকা কেজি দরে চাল ও গম প্রদান করে রাজ্য সরকার।
১৩.সমব্যথী প্রকল্প
২০১৬ সালে এ প্রকল্পটি চালু করা হয় এটি মূলত দরিদ্র পরিবারের মানুষজনদের মৃত্যুর পর অন্তোষ্টি ক্রিয়ার জন্য আর্থিক সাহায্য করে সরকার। পরিবার-পরিজনদের অন্তোষ্টিক্রিয়ায় ২০০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা করা হয়।
১৪.সবুজশ্রী প্রকল্প
২০১৬ সালের সরকারের তরফ থেকে এই সবুজশ্রী প্রকল্প চালু করা হয়, যার উদ্দেশ্য সমাজে প্রতিটি শিশুর জন্মের পরেই তাদের একটি করে মূল্যবান চারা গাছ দেওয়া হয়।
১৫.মুক্তির আলো প্রকল্প
সমাজে যে সমস্ত যৌনকর্মী বা নির্যাতিত নারী, বালিকারা রয়েছে তাদের উদ্দেশ্যেও সরকার প্রতিনিয়ত উদ্বিগ্ন থাকেন তারই বহিঃপ্রকাশ এই মুক্তির আলো প্রকল্প, যা ২০১৫ সালে চালু করা হয়। এতে এই সমস্ত নির্যাতিত নিপীড়িত নারীদের বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সমাজে তাদের স্বনির্ভর করে তোলা হয়।
১৬.রুপশ্রী প্রকল্প
২০১৮ সালে চালু করা হয় এই প্রকল্প যাতে রাজ্য সরকার বিবাহযোগ্য মেয়েদের জন্য এককালীন ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা করবার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। তবে পারিবারিক বার্ষিক আয় দেড় লক্ষ টাকার কম হতে হবে এবং বিবাহযোগ্য মেয়ের বয়স হতে হবে ১৮ বছর বা তার বেশি তাহলেই এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন মেয়েরা।
১৭.স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প
২০১৬ সালে রাজ্য সরকারের চালু করা এই বিশেষ প্রকল্পটি আজও সমান জনপ্রিয়, যাতে করে মানুষ স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্য বীমা কভারেজ পেয়ে থাকেন। প্রতিনিয়ত বহু মানুষ উপকৃত হচ্ছেন এই প্রকল্পের মাধ্যমে।
১৮.উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্প
শিক্ষার্থীদের বৃত্তিমূলক শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এই প্রকল্পের প্রচলন এ প্রকল্পটি শুরু হয় 16 ই ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সাল থেকে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বেকার যুবক-যুবতীরা রাজ্যের প্রথাগত কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার সুযোগ শুধু পাননি তাদের বিকল্প প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে।
১৯.মানবিক পেনশন প্রকল্প
রাজ্য সরকারের ২০১৮ সালের প্রচলিত এই মানবিক পেনশন প্রকল্পের মাধ্যমে আজও সমাজের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা উপকৃত হয়ে চলেছেন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্যই মূলত এই প্রকল্প। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে তাদের মাসিক হাজার টাকা করে একটি ভাতা দেওয়া হয়।
২০.সেভ ড্রাইভ সেভ লাইফ
নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে এর অর্থ, কী জন্য এই প্রকল্পটি আনা হয়েছে। তবু সকলের জন্য আরো একবার জানিয়ে রাখা ভালো প্রতিনিয়ত রাস্তাঘাটে যে সমস্ত দুর্ঘটনা ঘটছে তা আটকাতেই বা মানুষজনকে আরো সজাগ করে তুলতেই এই প্রকল্প। প্রকল্পটি ২০১৬ সালে চালু করা হয়।
২১.জাগো প্রকল্প
সমাজে যে সমস্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে তাদের জন্য ২০১৯ সালে চালু করা হয় এই জাগো প্রকল্পটি । সমাজের এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে বার্ষিক ৫০০০ টাকা করে সাহায্য প্রদান করে রাজ্য সরকার। ২৯ শে নভেম্বর সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্কে একটি অনুষ্ঠানে এই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেন মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি নিজেই প্রকল্পের নামকরণ করেছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠী গুলির হাতে এটি মোটা অংকের টাকা তুলে দিতে বদ্ধপরিকর রাজ্য সরকার তবে এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে গেলে মহিলাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর একজন সদস্য হতে হবে এবং অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের একজন স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে। এই প্রকল্পের অনুদানের বিষয়ে বিশদে জানতে একটি ফোন নম্বরও দেয়া রয়েছে যাতে মিসকল দিয়ে কিংবা মেসেজ করেও এই প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। ফোন নম্বরটি হল ৭৭৭৩০০৩০০৩।
২২.দুয়ারে সরকার প্রকল্প
করোনা মহামারী বা অতিমারীর সময় অর্থাৎ ২০২০ সাল থেকে এই প্রকল্পটি চালু করে রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের সমস্ত প্রকল্প যাতে মানুষের কাছে সহজে অর্থাৎ তার বাড়ির কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়।
২৩.পথশ্রী প্রকল্প
২০২০ সালে এই পথশ্রী প্রকল্প চালু করা হয় এ প্রকল্পের উদ্দেশ্যই হলো আমাদের যে সমস্ত পুরনো রাস্তা রয়েছে তার মেরামতি করা এবং তাকে একটি সুন্দর রূপ প্রদান করা। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যের ২২ টি জেলায় ১২ হাজার কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের মাধ্যমে রাস্তার অবকাঠামোকে শক্তিশালী করতেও গ্রামের সাথে যোগাযোগ বাড়াতে এই প্রকল্পটি চালু করে।
২৪. কর্ম সাথী প্রকল্প
সমাজের বেকার যুবক-যুবতীদের উদ্দেশ্যে মূলত এই প্রকল্পের শুরু ২০২০ সালে এ প্রকল্পটি চালু হয়। সমাজে যে সমস্ত বেকার যুবক যুবতীরা রয়েছেন তাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর করে তোলার জন্য আর্থিক ঋণের ব্যবস্থা করেছেন রাজ্য সরকার।
২৫. কৃষক বন্ধু প্রকল্প
কৃষকরা আমাদের রাজ্যের এবং আমাদের দেশের পরিকাঠামোকে সচল রাখে। তাদের ভূমিকা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তাই কৃষকদের উদ্দেশ্যে ২০১৯ সালে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে চালু করা হয় প্রকল্পটি। কৃষকরা আর্থিক অনুদান পান ও সাথে দু লক্ষ টাকার জীবন বীমাও পান। কৃষকদের জমির পরিমাণ অনুযায়ী ন্যূনতম ৪০০০ টাকা ও সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বছরে দুই কিস্তির মাধ্যমে টাকা দেওয়া হয়।
২৬. বন্ধু প্রকল্প
সমাজের ৬০ বছর বয়সী তপশিলি জাতির মানুষদের জন্য প্রকল্প চালু করে রাজ্য সরকার। ২০২০ সালে চালু হয় এই প্রকল্পটি বার্ধক্য ভাতা হিসেবে তাদের প্রতি মাসে ১০০০ টাকা করে অনুদান দেন রাজ্য সরকার।
২৭. বাংলাশ্রী প্রকল্প
সমাজের ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্পকে উৎসাহ দিতেই মূলত এই প্রকল্পের প্রচলন ২০২০ সালে চালু করা হয় এই প্রকল্প। এই প্রকল্পের মাধ্যমে হস্তশিল্পীরা মূলত স্কুলের পোশাক অর্থাৎ ইউনিফর্ম তৈরি করে থাকেন তাকেই মূলত বিশেষ সম্মান দেয়া হয়েছে এই বাংলা শ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে সবটুকুই শিল্পীদের অর্থনৈতিক সাহায্যের কথা মাথায় রেখেই চালু করা হয়েছে তাই ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্পের জন্য রাজ্য সরকারের ঝুলিতে স্কচ পুরস্কারটিও এসেছে।
২৮. স্নেহালয় প্রকল্প
সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্যই ২০২০ সালে এ প্রকল্পটি শুরু করা হয় । প্রত্যেকের মাথার উপর যাতে একটি সুরক্ষিত ছাদ থাকে তার জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ১ লক্ষ ২০০০০ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়। যাতে করে তারা তাদের নিজেদের একটি বাড়ি তৈরি করতে পারে।
২৯. চা সুন্দরী প্রকল্প
২০২০ সালে সূচনা হয় চা সুন্দরী প্রকল্পের । এই প্রকল্পে মূলত উপকৃত হচ্ছেন চা বাগানের গৃহহীনরাই। সমীক্ষা অনুযায়ী সরকারের তরফ থেকে তাদের আবাসন দেওয়া হয়।
৩০. স্নেহের পরশ প্রকল্প
সমাজের পরিযায়ী শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে এই প্রকল্পের সূচনা ২০২০ সালের প্রকল্পটি শুরু হয়। পরিচয় শ্রমিকরা এই প্রকল্পের মাধ্যমে মাসিক ১০০০ টাকা করে অনুদান পান সরকারের তরফ থেকে।
৩১. লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্প
২০২১ সালে রাজ্য সরকারের এই প্রকল্পটি চালু করা হয় যা আজও সমাজে প্রতিটি মানুষের কাছে সমান জনপ্রিয়। একপ্রকার বলা যায় এই প্রকল্পের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। লক্ষ লক্ষ মহিলারা এই প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। গৃহবধূদের আর্থিক দিকটি স্বনির্ভর করে তোলার বিষয়টির আগে কখনো কেউ ভাবেনি যা ভেবেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই মহিলাদের একটি লক্ষ্মীর ঝাঁপি করে দিয়েছেন তিনি, যাতে করে তাদের ইচ্ছা মতো তাঁরা খরচ করতে পারেন।
এই প্রকল্পটির উদ্দেশ্যই হলো মহিলাদের স্বনির্ভর করে তোলা। তার জন্য প্রথমে সরকারের তরফ থেকে মাসিক ৫০০ টাকা ও তপশিলি জাতিদের ১০০০ টাকা করে অনুদান দেওয়া হতো। বর্তমানে তা বাড়িয়ে করে দেওয়া হয়েছে সাধারণের জন্য ১০০০ টাকা ও তপশিলি জাতির মহিলাদের ১২০০ টাকা । এই প্রকল্প পেয়ে অত্যন্ত খুশি মহিলারা।
৩২. হাসির আলো প্রকল্প
২০২০ সালে সমাজের গরিব মানুষদের কথা ভেবে এ প্রকল্পটি চালু করার রাজ্য সরকার এই প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলে যারা দারিদ্র সীমার নিচে রয়েছেন সেই সমস্ত মানুষদের ত্রৈমাসিক ৭৫ ইউনিট অব্দি বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার।
৩৩. স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রকল্প
ছাত্র-ছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে ২০২১ সালে রাজ্য সরকার এ প্রকল্পটি ঘোষণা করেন যাতে ছাত্রছাত্রীরা তাদের পড়াশোনার জন্য ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারে। এর আগে পর্যন্ত এভাবে স্টুডেন্টদের জন্য স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের বিষয়টি কেউ ভাবেননি যেভাবে ভেবেছেন মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
৩৪. নিজ গৃহ নিজ ভূমি প্রকল্প
২০১১ সালে রাজ্য সরকার রাজ্যের ভূমিহীন মানুষদের কথা মাথায় রেখে চালু করেছিলেন এই প্রকল্প। ভূমিহীন মানুষরা যাতে স্থায়ী আশ্রয় পান সেটাই এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। তবে আশ্রয় পাওয়ার সাথে সাথে তাদের জীবন জীবিকার মায়েরও যাতে উন্নয়ন ঘটে, সেদিকেও নজর রাখা হয়েছে এই প্রকল্পের মাধ্যমে।
৩৫. মা প্রকল্প
আমরা সকলেই এই প্রকল্প সম্পর্কে জানি ৫ টাকায় ডিম ও ভাত প্রদান করায় এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য দরিদ্র মানুষরা যাতে ৫ টাকায় পুষ্টিকর খাদ্য পান। ২০২১ সালে এ প্রকল্প চালু করা হয় যা আজও সব মহিমায় চলছে।
৩৬. সবলা প্রকল্প
সমাজে কিশোরীদের স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের উন্নতির জন্য ২০২১ সালে এই প্রকল্প চালু করা হয়। যাতে তাদের ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি হয় সেদিকেই বিশেষ নজর রাখা হয়েছে এই প্রকল্পের মাধ্যমে
৩৭. পথ সাথী প্রকল্প
২০১৮ সালের প্রকল্পের পথ চলা শুরু। পথচারীদের সুবিধার্থে সরকারের তরফ থেকে একই ছাদের তলায় আহার রাতে থাকার ব্যবস্থা এমনকি শৌচালয় ব্যবস্থা রয়েছে। রাজ্যের সমস্ত জেলাগুলিকে একসঙ্গে জুড়েছে ন্যাশনাল হাইওয়ে বা জাতীয় সড়ক বা স্টেট হাইওয়ে বা রাজ্য সড়ক সেই সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় প্রতি ৫০ কিলোমিটার অন্তর একটি করে পান্থশালা করার কথা পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার।
রাজ্য সরকারের আবাসন দপ্তরের তত্ত্বাবধানে এই পথসাথী প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেন মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমানে ২৩ টি জেলার সবকটিতেই গড়ে উঠেছে এই প্রকল্পটি যাতে মানুষের সুদূর ভ্রমণে যাওয়ার পথে কিছুক্ষণ এই পান্থশালায় বিশ্রাম নিতে পারেন তার জন্যই এই ব্যবস্থা পান্থশালায় থাকছে ওয়েটিং রুম রাত্রে নিবাস এবং রেস্তোরাঁর মত সমস্ত আয়োজনই।
৩৮. গীতাঞ্জলি প্রকল্প
প্রতিটি মানুষ যাতে সুনিশ্চিত একটি আশ্রয় পান সেই ব্যবস্থাই করা হয়েছে এই প্রকল্পের হাত ধরে। রাজ্যের গৃহহীন ও দরিদ্র মানুষদের যাতে নিজস্ব বাড়ি নির্মাণ করা যায়, তারই জন্যই গীতাঞ্জলি আবাস যোজনা। অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণি বা বিপিএল কার্ড ধারী যে সমস্ত পরিবারগুলি রয়েছে যাদের পরিবারের সদস্যদের কোন একটি পাকা বাড়ি নেই তাদের যাতে নিজস্ব আশ্রয় হয়।
৩৯. উৎসশ্রী প্রকল্প
এ প্রকল্প সমাজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্দেশ্যে ২০১১ সালে চালু করা হয় শিক্ষক-শিক্ষিকারা যাতে বাড়ির নিকটবর্তী বিদ্যালয় আবেদন করতে পারেন তারই ব্যবস্থা করা হয়েছে এ প্রকল্পের মাধ্যমে যাতে তাঁদের বাড়ি থেকে দূরে সরকারি বিদ্যালয়ে কর্মরত না হতে হয় সেই সুবিধাই করে দিয়েছেন রাজ্য সরকার।
৪০. জল ধরো জল ভরো প্রকল্প
এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো বৃষ্টির জলকে সংরক্ষণ করা এবং তা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা ২০১১ সালে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে প্রকল্পের সূচনা হয়। এই প্রকল্প এক অন্য মাত্রা রাখে। যেভাবে আমরা প্রতিনিয়ত জলের অপচয় করে চলি আগামী দিনে তা যে কি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে চলেছে আমাদের জীবনে তা আমরা আগামী দিনেই বুঝতে পারব তাই এখন থেকেই সতর্কতার সাথে জলের ব্যবহার করা প্রয়োজন।
৪১. লোকপ্রসার প্রকল্প
২০১৪ সালে এই লোকপ্রসার প্রকল্প সূচনা হয় এটি মূলত বাংলার লোক শিল্পীদের উদ্দেশ্যেই চালু করা হয়েছে গ্রাম বাংলার বিভিন্ন আঞ্চলিক শিল্প রক্ষা করা ও লোক শিল্পীদের বাঁচিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে মাসিক একটি ভাতা প্রদান করা হয়।
৪২. উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্প
রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের সঠিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে সরকারের তরফ থেকে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের দুঃখ তা অনুযায়ী জব ফেয়ারের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মমুখী করে তোলা এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১৬ সালে।
৪৩. খেলাশ্রী প্রকল্প
সরকারের তরফ থেকে ২০১৭ সালে এই প্রকল্পটি চালু করা হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ক্রীড়াবিদদের মাসিক ভাতার সুব্যবস্থা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কমনওয়েলথ গেমস অলিম্পিক এশিয়ান গেমস বিশ্বকাপ বা জাতীয় পর্যায়ে যে সমস্ত সফল ক্রীড়াবিদরা রয়েছেন তাদের এই ভাতা দেবে রাজ্য সরকার এমনই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ধনধান্য অডিটোরিয়ামে একটি সভায়। এডি পাশাপাশি ক্রীড়াবিদদের চাকরির ও সুযোগ করে দেবেন তিনি।
৪৪. যোগ্যশ্রী প্রকল্প
এই প্রকল্পটি মাধ্যমে মূলত সমাজের তপশিলি জাতি অর্থাৎ acst বা অন্যান্য শিক্ষার্থীরা যারা জে ই ই ডব্লিউ বি জে ইট এর মত প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে চায় তাদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে এর অফিসিয়াল পোর্টাল হল wbbcdev.gov.in
সম্পূর্ণ বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের এই সমস্ত পরীক্ষার প্রস্তুতি পড়ানো হবে শিক্ষার্থীদের জন্য রাজ্য জুড়ে মোট ৫০ টিরও বেশি সেন্টারে ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্ন রাজ্যের সমস্ত শ্রেণীর শিক্ষার্থীরাই যাতে ইঞ্জিনিয়ার ডাক্তার হয়ে উঠতে পারে, তারই লক্ষ্যে তিনি এই প্রকল্পটি চালু করেন।
৪৫. সবলা প্রকল্প
২০১১ সালের রাজ্য সরকারের উদ্যোগে প্রকল্পটি চালু করা হয় এই প্রকল্পের উদ্দেশ্যই হল কিশোরীদের স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের উন্নতি ঘটানো এবং সমাজে মেয়েদের ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি করা। এই প্রকল্পের ১১ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোরীরা পুষ্টিকর খাদ্য পাবে তারই পাশাপাশি পাবে বৃত্তিমূলক দক্ষতা স্বাস্থ্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সংক্রান্ত নানান জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। এছাড়াও এই প্রকল্পের অধীনে যে সমস্ত কিশোরীরা অন্তর্ভুক্ত থাকবে তাদের দেয়া হবে একটি করে কিশোরী কার্ড যাতে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য দেওয়া থাকবে।
উপরোক্ত সমস্ত প্রকল্পগুলি অত্যন্ত সাফল্যমন্ডিত হয়েছে।রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের (West Bengal Government Schemes) হাত ধরে রাজ্যের প্রতিটি মানুষ উপকৃত হচ্ছেন এবং রাজ্য সরকার উচ্চস্তর থেকে নিম্নস্তরের মানুষদের জন্য যে প্রতিনিয়ত ভেবে চলেছেন তার প্রতিফলন ঘটেছে এই প্রকল্পের মাধ্যমে। মা মাটি মানুষের সরকার প্রতিনিয়তই রাজ্যের মানুষদের সেবার কাজে নিবেদিত প্রাণ। স্কুল পড়ুয়া থেকে শুরু করে কৃষক,প্রতিবন্ধী মানুষ এমনকি গৃহবধূ যুবক-যুবতীদের সুবিধার্থে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রকল্প চালু করেছেন মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাঁরা চান রাজ্যের প্রতিটি মানুষ ভালো থাকুক সুস্থ থাকুক তাই যে কোনো রকম আর্থিক সাহায্য তাঁরা দেওয়ার জন্য বদ্ধপরিকর। আশা করা যায় আগামী দিনের রাজ্য সরকার এভাবেই প্রতিটি মানুষের পাশে থাকবেন, প্রতিটি মানুষের কথা ভাববেন। এভাবেই আমরা আরো বহু প্রকল্প পাব। রাজ্যের সর্বস্তরের মানুষের পাশে যেভাবে তাঁরা রয়েছেন তাতে তাঁদের কুর্নিশ জানানো প্রয়োজন। সকলের ভরসা ও আস্থার মাপকাঠি মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একথা অনস্বীকার্য।